তান্ত্রিক নিবেদন
তান্ত্রিক পূজার দ্রব্যাদি নিবেদন সময়ে সমস্ত দ্রব্যে "নমঃ" শব্দ প্রয়োগ
করিয়া নিবেদন করা হয় না। যে দ্রব্য যাহা বলিয়া নিবেদন করিতে হয় তাহা লিখিত হইল, যথা -
ধূপ ও দীপদানের বিশেষ মন্ত্র
ওঁ বনস্পতিরসো দিব্যো গন্ধাঢ্যঃ সুমনোহরঃ।
আঘ্রেয়ঃ সর্ব্ব দেবানাং ধুপোহয়ং প্রতিগৃহৃতাম্।। ইতি ধুপ।
সর্বাহ্যাভ্যন্তর জ্যোতিদৌপোহয়ং প্রতিগৃহ্যতাম্।। ইতি দীপঃ।
জপনিয়ম
স্ত্রীদেবতার জপ শক্তিমালাক্রমে ও পুরুষদেবতার জপ শৈবমালাক্রমে করিবে।
শক্তিমালা।
অনামিকাদ্বয়ং পর্ব্ব কনিষ্ঠাদিক্রমেণ তু।
তর্জ্জনীমূলপর্য্যন্তং প্রজপেৎ সুসমাহিতঃ।।
মানুষের আঙ্গুলের প্রতি সন্ধিস্থলে যে দাগ আছে, উহার দুইর রেখার মধ্যস্থলকে এক এক পর্ব্ব বলে। প্রত্যেক অঙ্গুলীতে তিনটি করিয়া এইরূপ পর্ব্ব আছে।
নৈবেদ্য
নৈবেদ্যং দক্ষিণেবামে পুরতো বা ন পৃষ্ঠত।
ধুপ ও দীপ
দীপং দক্ষিণতো দদ্যাৎ পুরতো বা ন বামতঃ।
বামতস্তু তথা ধূপং
পূরতো ন তু দক্ষিণে।।
ন ভুমৌ বিতবেদ্ধুপং নাসনে চ ঘটে তথা।
তথাধারগতং কৃত্বা ধূপং তু বিনিবেদয়েৎ।।
ধুপ বামদিকে দিবে, সম্মুখে বা দক্ষিণে
দিবে না, ধুপ আসনে বা ঘটে রাখিয়া নিবেদন করিবে না। আধারে রাখিয়া নিবেদন করিবে না। আধারে রাখিয়া নিবেদন
করিবে।
পুস্প ও বিল্বপত্র
যথোৎপন্নং তথা দেয়ং বিল্বপত্রং ত্বধোমুখম্।
অঙ্গুষ্ঠতর্জ্জনীভ্যাঞ্চ বৃন্তং ধৃত্বা সমর্পয়েৎ।
বহুপুস্পসমাযুক্তপ্রদানে নিয়মো ন হি।
সংস্থাপ্য বামহস্তে
তু ততঃ পুস্পং ন দীয়তে।
মধুপর্ক
দধিসর্পির্জলং ক্ষৌদ্রৎ সিতৈতাভিন্তু পঞ্চভিঃ।
প্রোচ্যতে মধুপর্কন্তু সর্ব্ব দেবৌঘতুষ্টয়ে।।
জলন্তু সর্ব্বতঃ স্বল্পং সিতে-দধি ঘৃতং সমম্।
সর্ব্বেষামধিকং ক্ষৌদ্রং মধুপর্কে প্রয়োজয়েৎ।
তদ্দদ্যাৎ কাংস্যপাত্রেণ রৌক্সশ্বেতভবেন বা।
- কালিকাপুরানাম্।
অর্ঘ্য
গন্ধপুস্পাক্ষতযবকুশাগ্রতিলসর্ষপৈঃ সদূর্ব্বৈঃ সর্ব্ব দেবানামেতদর্ঘ্যমুদাহৃতম্।
উপচার দানবিধি
যে দ্রব্য নিবেদন করিতে হইবে, তাহা পুংলিঙ্গবাচক, শব্দ হইলে তৎপূর্ব্বে এষ শব্দ ব্যবহার করিতে হয়। যেমন এষ ধূপ ইত্যাদি আর স্ত্রীলিঙ্গবাচক হইলে এষা শব্দ তৎপূর্ব্বে বলিবে। যথা - এষা শর্করা। ক্লীবলিঙ্গ হইলে এতং বা ইদং শব্দ ব্যবহার করিবে। যেমন এতং পাদ্যম্, ইদম্, আসনম্ ইত্যাদি। সকল উপচারই প্রথমান্ত হইবে।
অষ্টাদশোপচার পূজা
আসনং স্বাগতং পাদ্যমর্ঘ্যমাচমনীয়কম্।
মধুপর্কস্তথা স্নানং
যজ্ঞোপবীত ভূষণম্।
গন্ধপুস্পে তথা ধূপদীপাবন্নঞ্চ দর্পণম্।
মাল্যানুলেপনঞ্চৈব নমস্কার-বিসর্জ্জনে।
অষ্টাদশোপচারৈস্তু
মন্ত্রী পূজাং সমাচরেৎ - তন্ত্রসারঃ।
বিংশতিউপচার পূজা
আসনং স্বাগতং পাদ্যমর্ঘ্যমাচমনীয়কম্। মধুপর্কস্তথা স্নানং
বসনাভরণানি চ।। গন্ধপুস্পে ধূপদীপৌ নৈবেদ্যাচমনস্ততঃ। তাম্বুলমর্চ্চনা স্তোত্রং তর্পণঞ্চ নমস্ক্রিয়া। প্রযোজয়েদর্চ্চনায়ামুপচারাংস্তু বিংশতিম্।। - তন্ত্রসারঃ।
দশোপচার পূজা
পাদ্যমর্ঘ্যং তথাচামং গন্ধপুস্পৈ স্পথা পরে।
ধূপদীপনৈবেদ্যাস্তা উপচারা দশ ক্রমাৎ।। - তন্ত্রসারঃ।
পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, পানীয়, পুনরাচমনায়, গন্ধ পুস্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য এই দশোপচার-পূজা। তন্ত্রসারোদ্ধৃত বচনে যদিও আচমনীয় পুনরাচমনীয়ের উল্লেখ নাই, কিন্তু টীকাকার প্রতিষ্ঠাতত্ত্বে উহার উল্লেখ করিয়াছেন।
পঞ্চোপচার পূজা
গন্ধ, পুস্প, ধুপ, দীপ ও নৈবেদ্য এই পঞ্চোপচারে পূজা হয়। পঞ্চোপচার পূজার ধান্যাদি পাঠ করিতে দেখা যায় না।
তান্ত্রিক-শান্তি
ওঁ সুরাস্ত্বামভিষিঞ্চন্তুব্রহ্মবিষ্ণুমহেশ্বরাঃ।
বাসুদেবো জগন্নাথস্তবা সঙ্কর্ষণো বিভুঃ।
প্রদ্যুম্নশ্চানিরুদ্ধশ্চ
ভবন্তু বিজয়ায় তে।।
ওঁ আখণ্ডলোহগ্নির্ভগবান্ যমো বৈ নৈঋর্তস্তথা।।
বরুণঃ পবনশ্চৈব ধনাধ্যক্ষস্তথা শিবঃ। ব্রহ্মণা
সহিতঃ শেষো
দিক্পালাঃ পান্তু তে সদা।।
ওঁ কীর্ত্তিলক্ষ্মীর্ধৃতিমেধা
শ্রদ্ধা পুষ্টিঃ ক্ষমা মতিঃ।
বুদ্ধিলর্জ্জা বপুঃ
শান্তিস্তুষ্টিঃ কান্তিশ্চ মাতরঃ।
এতাস্ত্বামভিষিঞ্চন্তু
ধর্মপত্ন্যঃ সমাগতাঃ।
ওঁ আদিত্যশ্চন্দ্রমা ভৌমো বুধজীবসিতার্কজাঃ।
গ্রহাস্ত্বামভিষিঞ্চন্তু ভাহুঃ কেতুশ্চ তপিতাঃ।।
ওঁ ঋষয়ো মুনয়ো গাবো দেবমাতর এব চ।
দেবপত্ন্যো ধ্রুবা
নাগা দৈত্যাশ্চাপ্সরসাং গণাঃ।
অস্ত্রাণি সর্বশস্ত্রাণি
রাজানো বাহনানি চ।
ঔষধানি চ রত্নানি কালস্যাবয়বাশ্চ যে।।
ওঁ সরিতং সাগরাঃ। শৈলাস্তীর্থানিজলদা নদাঃ।
দেবদানবগন্ধর্ব্বা যক্ষরাক্ষসপন্নগাঃ।
এতে ত্বামভিষিঞ্চন্তু
ধর্ম্মাকামার্থ সিদ্ধয়ে।
যজুর্ব্বেদীয়-শান্তি
ওঁ ঋচং বাচং প্রপদ্যে মনো যজূঃ প্রপদ্যে সাম প্রাণং প্রপদ্যে চক্ষুঃশ্রোত্রং প্রপদ্যে বাগৌজঃ সহৌজ ময়ি প্রাণাপানৌ।
ওঁ ষন্মে ছিদ্রং চক্ষুষোর্হৃদয়স্য
মনসো বাতিতৃণ্নং বৃহস্পতিতে তদ্দধাতু। শন্নো ভবতু ভুবনস্য
যস্পতিঃ।।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ।
স্বস্তি নস্তাক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দ্দাধাতু।।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।।
ঋগ্বেদীয়-শান্তি
ওঁ শংবতীঃ পাবয়ন্ত্যেতে তং পৃচ্ছন্তি বচো যুজা
অভ্যান্তরং তং জমাকেতুং য এবেদমিতি ব্রুবন্। ১।
ওঁ ভাসাকেতুং পুরুস্পৃহুং ভারতী ব্রহ্মবর্দ্ধনীঃ।
সংজানানা মহী মাতা য এবেদমিতি ব্রুবন্। ২।
ওঁ ইন্দ্রস্তং কিং বিভুং ভানুংনেয় সরস্বতীম্।
যেন সুর্য্যমরোচয়দ যেনেমে রোদসী উভে। ৩।
ওঁ জুষম্বাগ্নে অঙ্গিরঃ কাণ্বং মেধাতিথিম্।
মা ত্বা সোমস্য বর্বৃহৎসুতস্য মধুমত্তমঃ। ৪।
ওঁ শং ত্বমগ্নে অঙ্গিরঃ শোচম্ব দেববীতমঃ।
আ শন্তমান্তমাভিরষ্টিভিঃ শান্তিঃ স্বস্তিমকুর্ব্বত। ৫।
ওঁ শং নঃ কনিক্রদদ্দেবঃ পর্জন্যো অভিবর্ষতু।
শং নো দ্যাবাপৃথিবী শং প্রজাভ্যঃ শং ন এধি দ্বিপদে শং চতুস্পদে। ৬।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ।
স্বস্তি নস্তাক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তি নো বৃহস্পতির্দ্দধাতু। ৭।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি।।
ওঁ কয়া নশ্চিত্র আ ভুবদৃতী সদা বৃধঃ সখা।
কয়া শচিষ্ঠয়া বৃতা।।
ওঁ কস্তা দত্যো মদানাং মংহিষ্ঠো মৎসদন্ধসঃ।
দৃঢ়া চিদারুজে বসু।
ওঁ অভীষুণঃ সখিনামবিতা জরিতৃণাম্।
শতং ভবাঃ স্যূতয়ে।।
ওঁ স্বস্তি ন ইন্দ্রো বৃদ্ধশ্রবাঃ স্বস্তি নঃ পূষা বিশ্ববেদাঃ
স্বস্তি নস্তার্ক্ষ্যো অরিষ্টনেমিঃ স্বস্তিনো বৃহস্পতিদ্দ ধাতু।।
ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি ওঁ স্বস্তি। ওঁ শান্তিরস্তু।
শিবঞ্চাস্তু বিনশ্যত্যশুভঞ্চ যৎ।
যত এবাগতৎ পাপং তত্রৈব
প্রতিগচ্ছতু স্বাহা।
আরাত্রিক
আদৌ চতুস্পাদতলৈকদেশে দ্বৌ নাভিদেশে চ মুখমণ্ডলে ত্রীন্।
সর্ব্বেষু গাত্রেষে চ সপ্তবারানারাত্রিকং তন্মুনয়ো বদন্তি।।
অগ্রে দেবতার পদতলে চারিবার, নাভিদেশে দুরিবার, মখমণ্ডলে তিনবার তৎপরে সর্ব্বগাত্রে সাতবার আরাত্রিক করিতে হয়। চরণ, নাভি, মুখ প্রভৃতির দিকে
দৃষ্টিনিক্ষেপ করতঃ আরাত্রিক করিতে হয়। আরাত্রিককে নীরাজন
বলে। ধুপ দীপ প্রভৃতি নিবেদন করিয়া আরাত্রিক করিতে হয়। পঞ্চনীরাজন-বিধিক্রমেও আরাত্রিক করা হইয়া থাকে। পঞ্চনীরাজন যথা -
পঞ্চনীরাজং কুর্য্যাৎ প্রথমং দীপমালয়া। দ্বিতীয়ং সোদকাজেন
তৃতীয়ং ধৌতবাসসা। চ্যুতাশ্বত্থবিল্বপত্রৈশ্চতুর্থং পরিকীর্ত্তিতম্। সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাতেন পঞ্চমেন যথাবিধি।।
চন্দনাদিলেপনবিধি
নির্ম্মাল্যং শিরসা ধার্য্যং সর্বাংঙ্গে চানুলেপনম্। নৈবেচ্যং চোপভুঞ্জিত দত্বাতদ্ভক্তিশালিনে। দেবতার্চ্চাবশিষ্টং যৎ সলিলং শঙ্খমধ্যগণ। অঙ্গলগ্নং মনুষ্যাণাং ব্রহ্মহত্যাং ব্যপোহতি।। তন্ত্রসারঃ।
আত্মসমর্পণ
গণ্ডুষজপরিমিত জল হস্তে গ্রহণ করিয়া নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠপূর্ব্বক সেই জল দেবতাচরণে
অর্পণ করিবে। মন্ত্র যথা - ওঁ ইতঃ পূর্ব্বং প্রাণবুদ্ধি দেহধর্ম্মাধিকারতো
জাগ্রৎস্বপ্নসুষুপ্ত্যবস্থাসু মনসা বাচা হস্তাভ্যং পদ্ভ্যামুদরেণ শিশ্মা যৎ স্মৃতং
যদুক্তং যৎ কৃতং তৎসর্ব্বং ব্রহ্মার্পণং ভবতু স্বাহা, মাং মদীয়ং সকলং সম গমুকদেবতায়ৈ সমর্পয়ামি ওঁ তৎ সং।
''দেবতার শরীরে আবরণ-দেবতাগণ বিলীন হইয়াছে,'' এইরূপ চিন্তা করিয়া ''ক্ষমস্ব'' এই মন্ত্রে বিসর্জ্জন করিবে।''
সংহারমুদ্রয়া তত্তেজঃ পুস্পৈঃ সার্দ্ধং স্বহ্রদয়মানয়েৎ।
তথাচ - নিধায় দেবতাং পশ্চাৎ স্বীমহৃৎসরসীরুহে।
সুষুম্নাবর্ত্মনা পুস্পমাঘ্রায়োদ্বাসয়েত্ততঃ।। ইতি তন্ত্রসারঃ।।
প্রদক্ষিণ
শঙ্খহস্তেন সর্ব্বত্র দক্ষিণং পরিকীর্ত্তিতম্। - বিশ্বসার।
হস্তে শঙ্খ লইয়া দেবতার প্রদক্ষিণ করিবে।
দক্ষিণাদ্বায়বীং গত্বা দিশস্তস্যাশ্চ শাম্ভবীম, ততশ্চ দক্ষিণং গত্বা নমস্কার স্ত্রিকোণবৎ। অর্দ্ধচন্দ্রং মহেশস্য পৃষ্ঠতশ্চ সমীরিতা। শিবপ্রদক্ষিণে মন্ত্রী অর্দ্ধচন্দ্রক্রমেণ তু।। সব্যাসব্যক্রমেণৈব সোমসূত্রং ন লঙ্ঘ্যয়েৎ। সোমসূত্রং জলনিঃসরণস্থানম্।। ইতি তন্ত্রসারঃ।
শক্তি দেবতার প্রদক্ষিণ ত্রিকোণাকারে করিবে, যথা - দেবতার দক্ষিণদিক হইতে বায়ুকোণ পর্য্যন্ত গমন করিয়া পরে ঈশানকোণে গমন করিতে
হয়, তদনন্তর পূনরায় বায়ুকোণ দিয়া দক্ষিণে আসিতে হয়। ইহাকেই ত্রিকোণাকার প্রদক্ষীণ বলে। শিবপ্রদক্ষিণস্থলে
অর্দ্ধচন্দ্রকারে প্রদক্ষিণপূর্ব্বক প্রণাম করিবে, - অর্থাৎ অগ্নিকোণ হইয়া বায়ুকোণ যাইবে এবং বায়ুকোণ হইতে অগ্নিকোণে আসিবে। সোমসূত্র লঙ্ঘন করিতে নাই। যোনিপীঠের অগ্রবর্ত্তী
স্থানকে সোমসূত্র বলে।
একং দেব্যা রবৌ সপ্ত ত্রীণি কুর্য্যাদ্বিনায়কে।
চত্বারি কেশবে কুর্য্যাৎ শিবেচার্দ্ধ-প্রদক্ষিণ্ম।।কর্ম্মলোচনম্।
স্ত্রীদেবতাকে একবার, সূর্য্যকে সাতবার, গণেশকে তিনবার, বিষ্ণুকে চারিবার এবং শিবকে অর্দ্ধ প্রদক্ষিণ করিবে। বিষ্ণুকে তিনবার প্রদক্ষিণ করার বিধিও দেখা যায়। যথা -
সরুভ্রির্বা বেষ্টিয়িত্বা দেব্যাঃ প্রীতিঃ প্রজায়তে।
স চ প্রদক্ষিণো জ্ঞেয়ঃ সর্ব্বদেবস্য তুষ্টিদঃ।। - কালিকাপুরাণম্।
প্রণাম-বিধি
অষ্টাঙ্গ ও পঞ্চাঙ্গ প্রণামই দেবপূজায় প্রশস্ত। পূজান্তে এইরূপ প্রণাম করিতে হয়। পূজাকালে আসনোপবিষ্ট
পূজক করযোড়ে প্রণাম করিবে।
অষ্টাঙ্গ-প্রণাম।
পদ্ভ্যাং করাভ্যাং জানুভ্যামুরসা শিরসা দৃশা।
বচসা মনসা চৈব প্রণামোহষ্টাঙ্গ ঈরিতঃ। তন্ত্রসারঃ।
পদদ্বয়, হস্তদ্বয়, জানুদ্বয়, বক্ষ, মস্তক, চক্ষু, বাক্য ও মন এই অষ্ট
অঙ্গ দ্বারা প্রণামকে অষ্টাঙ্গ প্রণাম বলে।
পঞ্চাঙ্গ-প্রণাম।
বাহিভ্যাঞ্চৈব জানুভ্যাং শিরসা বচসা দৃশা।
পঞ্চাঙ্গোহয়ং প্রণামঃ স্যাৎ পূজাসু প্রবরাবিমৌ।। তন্ত্রসারঃ।
বাহুদ্বয় জানুদ্বয়, মস্তক, বাক্য ও চক্ষুঃ এই পঞ্চাঙ্গ প্রণামকে পঞ্চাঙ্গ-প্রণাম বলে।
বিষ্ণুকে বামে, শক্তি এবং শঙ্করকে
দক্ষিণে ও গুরুকে অগ্রে রাখিয়া প্রণাম করিবে। ইহার অন্যথা করিলে নিস্ফল হয়।
একহস্ত প্রণামশ্চ একং বাপি প্রদক্ষিণম্।
অকালে দর্শনং বিষ্ণোর্হন্তি পুণ্যং পুরাকৃতম্।।
জপসমর্পণ
এবং জপং পুরা কৃত্বা গন্ধাক্ষতকূশোদকৈঃ। জপং সমর্পয়েদ্দব্যা
বামহস্তে বিচক্ষণঃ।। দেবস্য দক্ষিণে হস্তে কূশপুস্পার্ঘ্যবারিভিঃ।।
প্রাগুক্ত প্রকারে জপ করিয়া গন্ধাক্ষত ও কূশোদক দ্বারা নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠ করতঃ
স্ত্রীদেবতার বাম হস্তে জপ সমর্পণকরিবে, আর পুরুষদেবতার দক্ষিণহস্তে কূশ, পুস্প ও অর্ঘ্যজল দ্বারা জপ সমর্পন করিবে। যথা -
''সুরেশ্বরী'' স্থলে ''মহেশ্বরী'' আদিও বলা যায়। আর পুরুষদেবতা হইলে ''গোপ্ত্রী ত্বং'' স্থলে ''গোপ্তা ত্বং'' ''মে দেবী'' স্থলে ''মে দেব'' ''সুরেশ্বরী'' স্থলে ''সুরেশ্বর'' ''মহেশ্বর'' আর বিষ্ণুবিষয়ে ''জনার্দ্দন'' বলিবে।
জপনিয়ম
শক্তিমালা।অনামিকাদ্বয়ং পর্ব্ব কনিষ্ঠাদিক্রমেণ তু।তর্জ্জনীমূলপর্য্যন্তং প্রজপেৎ সুসমাহিতঃ।।মানুষের আঙ্গুলের প্রতি সন্ধিস্থলে যে দাগ আছে, উহার দুইর রেখার মধ্যস্থলকে এক এক পর্ব্ব বলে। প্রত্যেক অঙ্গুলীতে তিনটি করিয়া এইরূপ পর্ব্ব আছে।অনামিকার মধ্য পর্ব্ব হইতে জপ আরম্ভ করিয়া কনিষ্ঠার তিন পর্ব্ব তারপরে অনামিকার অগ্রপর্ব্ব ও মধ্যমার তিন পর্ব্ব এবং তর্জ্জনীর মূল পর্ব্ব পর্য্যন্ত জপ করিবে।শৈবমালা।তিস্রোহঙ্গুল্যস্ত্রিপর্ব্বাণো মধ্যমা চৈক পর্ব্বিকা।মধ্যমায়া দ্বয়ং পর্বং মনুত্বেনোপকল্পিতম্।।অনামিকার দুই পর্ব্ব, কনিষ্ঠার তিন পর্ব্ব, অনামা ও মধ্যমার অগ্রপর্ব্বদ্বয়, তৎপর তর্জ্জনীর অগ্রপর্ব্ব হইতে মূল পর্ব্ব পর্য্যন্ত জপ করিবে।এইরূপ জপে দশসংখ্যক জপ হয়। এই দশগুণিত রূপে যত ইচ্ছা, তত সংখ্যক জপ করা যাইতে পারে। অর্থাৎ একবার এই প্রকারে জপ সমাপ্ত করিলে দশবার হইল, তাহার এক সংখ্যা রাখিয়া পুনরায় ঐরূপে দশবার জপ করিলে আর একটি সংখ্যা ঠিক রাখিয়া, ক্রমে যত ইচ্ছা জপ করিতে পারে। এইরূপ জপ সংখ্যা ঠিক রাখিবার জন্য যে দ্রব্য অব্যবহার্য্য বা ব্যবহার্য্য তাহা এই -নাক্ষতৈহর্স্তপর্ব্বৈর্বা ন ধান্যৈন চ পুস্পকৈঃ।ন চন্দনৈর্মৃদাবাচ জপসংখ্যান্তু কারয়েৎ।। তন্ত্রসারঃ।চাউল, হস্তপর্ব্ব, ধান্য, পুস্প, চন্দন বা মৃত্তিকার দ্বারা জপসংখ্যা করিবে না।লাক্ষাকুশীদসিন্দুরং গোময়ঞ্চ করীষকম্।বিলোড্য গুটিকাং কৃত্বা জপসংখ্যাঞ্চ কারয়েৎ।।লাক্ষা, কুশীদ, সিন্দুর, গোময় বা করীষক (শুষ্ক গোময়) দ্বারা গুটিকাদি প্রস্তুত করিয়া তদ্দারা জপসংখ্যা রাখিবে।অঙ্গুল্যগ্রে চ যজ্জপ্তং যজ্জপ্তং মেরুলঙ্খনে।পর্ব্বসন্ধিষু যজ্জপ্তং তৎসর্ব্বং নিস্ফলং ভবেৎ।।অঙ্গুলির অগ্রভাগ দ্বারা জপ করিবে না, - অর্থাৎ নখস্পর্শ না হয়। মেরু (জপের মালার গোড়ার বৃন্তমালা এবং হস্তজপের অঙ্গুলির গোড়ায় রেখা) লঙ্ঘন করিয়া জপ করিবে না এবং পর্ব্ব সন্ধিতে - অর্থাৎ রেখাগুলিতে কদাচ জপ করিবে না, করিলে জপ নিস্ফল হয়।যথাশক্তি জপ লেখা থাকিলে দশ, অষ্টাদশ, অষ্টাবিংশতি বা অষ্টোত্তর শত কিম্বা সহস্র জপ করিতে হয়। জপের সংখ্যা নির্দ্দিষ্ট থাকিলে তাহার চারিগুণ জপ করা বিধেয়। কারণ কলিতে চারিগুণের ব্যবস্থা আছে।আটবার জপ করিতে হইলে নিম্নলিখিত ক্রম অনুসারে জপ করিতে হয়। দশসংখ্যক জপ করিয়া তৎপরে অষ্টসংখ্যক জপেও এই নিয়ম। যথা -অনামামূলমারভ্য কনিষ্ঠাদিক্রমেণ তু।তর্জ্জনীমধ্যপর্য্যন্তমষ্টপর্ব্বসু সঞ্জপেৎ।।অনামিকার মূলপর্ব্ব হইতে আরম্ভ করিয়া কনিষ্ঠাদিক্রমে তর্জ্জনীর মধ্যপর্ব্ব পর্য্যন্ত জপ করিবে।হৃদয়ে হস্তমাধায় তির্য্যক্ কৃত্বা করাঙ্গুলীঃ।আচ্ছাদ্য বাসসা হস্তৌ দক্ষিণেন সদা জপেৎ।।দক্ষিণ হস্তের অঙ্গুষ্ঠ ব্যতীত অঙ্গুলী সকল পরস্পর সংলগ্ন করিয়া চিৎভাবে হৃৎপদ্মে ঐ হাত রাখিবে এবং বামহাত দক্ষিণহাতের তলদেশে ঐরূপ ভাবে দিয়া অঙ্গুলীগুলি বক্রভাব করিয়া অঙ্গুষ্ঠের অগ্রপর্ব্ব দ্বারা জপ করিবে। জপের সময় বস্ত্র দ্বারা উভয় হস্ত আচ্ছাদান করিয়া রাখিবে।জপকালীন দেবতাকে চিন্তা করিতে করিতে মন্ত্র অতিস্পষ্টভাবে যথাবিধি উচ্চারণ করিয়া অন্যের অশ্রুতরূপে জপ করিবে। ইহার নাম উপাংশু জপ। মানস জপ সর্বাপেক্ষা প্রশস্ত। জপকালে কোন প্রকার অঙ্গভঙ্গী, দাঁত বাহির করা, অন্য দিকে মন দেওয়া, হাঁচি কি কাসি প্রভৃতি নিষেধ।''জপস্যাদৌ তথা চান্তে প্রাণায়ামং সমাচরেৎ।।''জপ করিবার আগে এবং জপের শেষে প্রাণায়াম করিতে হয়।বিশেষার্ঘ্য স্থাপন
পূজক নিজের বাম দিকে চতুষ্কোণ মণ্ডল করিয়া সেই চতুষ্কোণ মণ্ডলের মধ্যে একটি বৃত্ত এবং তাহার মধ্যে একটি ত্রিকোণ মণ্ডল করিবে এবং সেই ত্রিকোণ মণ্ডলের মধ্যে "হূং" এ বীজমন্ত্র লিখিয়া অর্চ্চনা করিবে। যথা - এতে গন্ধপুস্পে ওঁ আধারশক্তয়ে নমঃ, ওঁ কুর্ম্মায় নম;, ওঁ অনন্তায় নমঃ, অঁ পৃথিব্যৈ নমঃ।তৎপরে উহার উপরে ত্রিপদিকা আরোপণ করিয়া "হূং ফট্" এই মন্ত্রে শঙ্খ ধুইয়া মণ্ডলের উপর রাখিবে। মূলমন্ত্র শুদ্ধ জল উহাতে দিয়া - ''মং বহ্নি মণ্ডলায় দশকলাত্মনে নমঃ, এই মন্ত্রে ত্রিপদিকায় - ''অং অর্কমণ্ডলায় দ্বাদশ কলাত্মনে নমঃ'' এই মন্ত্রে শঙ্খে - ''উং সোমমণ্ডলায় ষোড়শ কলাত্মনে নমঃ এই মন্ত্রে জলে পূজা করিবে। তদনন্তর শঙ্খস্থ জল তিনভাগ করিয়া মূলমন্ত্রে গন্ধপুস্প দিয়া পুস্প দূর্ব্বা, গন্ধ ও তণ্ডুলাদিতে অর্ঘ্য সাজাইয়া তদুপরি রাখিয়া ধেনুমুদ্রাদ্বারা অমৃতীকরণ, মৎস্যমুদ্রায় আচ্ছাদন, তৎপরে অঙ্কুশমুদ্রা দ্বারা জল শোধন করিবে। মন্ত্র যিথা - ''ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি। নর্ম্মদে সিন্ধু কাবেরি জলেহস্মিন্ সন্নিধিং কুরু।।''অনন্ত্র আটবার মূলমন্ত্র জপ করিয়া স্বীয় হৃদয় হইতে দেবতাকে সেই জলে আবাহন করতঃ ''হূং এই অবগুণ্ঠন মন্ত্রে যথাবিধি মুদ্রা দেখাইবে। দেবতা বিশেষে যাহা বিশেষ আছে, তাহা তত্তৎপদ্ধতিতে লিখিত হইবে। তদনন্তর অঙ্গন্যাস ও করন্যাস করিয়া সেই অর্ঘ্যপাত্রের জল প্রোক্ষণীপাত্রে লইয়া সেই জল নিজ মস্তকে ও পূজায় উপরকণাদিতে অভ্যুক্ষণ করিবে। (ছিটাইয়া দিবে)।মানস-পূজা
বাহ্যপূজাক্রমেণৈব ধ্যানযোগেন পূজয়েৎ। সংপূজ্য চিন্তয়েদ্দেবং বচসা মনসা হৃদা। তথৈব সাধক্যে লোকে চান্তযোগপরায়ণঃ।। ইতি মুণ্ডমালা তন্ত্রে।হৃদয়ে প্রার্থনামুদ্রা স্থাপনপুর্ব্বক বাহ্যপূজার উপচার উপকরণাদি এবং উল্লিখিত ক্রমদ্বারা মানসপূজা করিতে হয়। বাক্য মন ও হৃদয় দ্বারা মানস পূজা করিবে।আবাহন
মূলমন্ত্রং সমুচ্চার্য্য সুষুম্নাবর্ত্মনা সুধীঃ। আনীয় তেজঃ স্বস্থানান্নাসিকারন্ধ্র নির্গতম্। করস্থে মাতৃকাম্ভোজে চৈতন্যং পুস্পসঞ্চয়ে। সংযোজ্য পুস্পমধ্যে তৎ সংস্থাপ্যাবাহয়েত্তত। ইতি আগমকল্পদ্রুমঃ।আবাহনের বিশেষ নিয়ম এই যে মূলমন্ত্র উচ্চারণপূর্ব্বক সুষুম্নাপথে স্বস্থান হইতে তেজ আনয়ন করতঃ নাসারন্ধ্র পথে নির্গত করিয়া করস্থিত পুস্পসঞ্চয়ে সংস্থান পূর্ব্বক আবাহন করিবে।বিনায়কং তথা দূর্গাং বায়ুমাকাশমেব চ।আবাহয়েদ্ ব্যাহৃতিভিস্থথৈবাশ্বিকুমারকৌ।।বিনায়ক - অর্থাৎ গণেশ, দূর্গা, বায়ু, আকাশ এবং অশ্বিনীকুমারদ্বয়কে ব্যাহৃতি দ্বারা আবাহন করিবে। ব্যাহৃতি ভূভুর্বঃ স্বঃ।ইহাগচ্ছ দ্বিধা পৃচ্ছেদিহ তিষ্ঠ দ্বিধা পুনঃ। ইহ শব্দাৎ সন্নিধেহি ইহ সন্নি-পদাত্ততঃ। রুধ্যস্ব-পদমাভাষ্য কুরুব্দয়মতঃ পরম্।। ইতি সরস্বতীতন্ত্রম্।দুইবার ইহাগচ্ছ (আবাহনী মুদ্রাদ্বারা) দুইবার ইহ তিষ্ঠ (ছাপনীমুদ্রাদ্বারা) বলিবে। তৎপরে, ইহ সন্নিধেহি (সন্নিধাপনী মুদ্রাদ্বারা), ইহ সন্নিরুধ্যস্ব, (সংবোধনী মুদ্রাদ্বারা), অত্রাধিষ্ঠানং কুরু (সন্মুখীকরণী মুদ্রাদ্বারা), মম পূজাং গৃহাণ (করযোড় করিয়া) বলিবে।
প্রাণপ্রতিষ্ঠা
দূর্ব্বা ও আতপ চাউল দেবতার হৃদয়ে ধরিয়া নিম্নলিখিত মন্ত্র পাঠ করিবে এবং বাম হস্তে ঘন্টাধ্বনি করিতে হয়। মন্ত্র যথা -ওঁ আং হ্রীং ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌং সঃ অমুকদেবতায়াঃ প্রাণা হই প্রাণাঃ। ওঁ আং হ্রীং ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌং হং সঃ অমুকদেবতাঃ জীবঃ ইহ স্থিতঃ। ওঁ আং হ্রীং ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌং হং সঃ অমুকদেবতায়াঃ সর্ব্বেন্দ্রিয়াণি। ওঁ আং হ্রীং ক্রোং যং রং লং বং শং ষং সং হৌং হং সঃ অমুকদেবতায়াঃ বাঙ্খনশ্চক্ষুস্ত্বক্শ্রোত্রঘ্রাণপ্রাণা ইহাগত্য সুখং চিরং তিষ্ঠন্তু স্বাহা। ওঁ মনোজুতির্জুষতামাজ্যস্য হৃহস্পতির্যজ্ঞমিমং তনোতু। অরিষ্টং যজ্ঞং সমিমং দধাতু বিশ্বেদেবাস ইহ্ন মাদয়ন্তামোম্ প্রতিষ্ঠা। অস্যৈ প্রাণাঃ প্রতিষ্ঠন্তু অস্যৈ প্রাণাঃ ক্ষরন্তু চ। অস্যৈ দেবত্বসংখ্যায়ৈ স্বাহা।পুরুষদেবতার স্থলে "অস্যৈ" স্থলে "অস্মৈ" বলিতে হয়। লেলিহা মুদ্রাদ্বারা প্রাণ-প্রতিষ্ঠা করে বিধেয়।চক্ষুর্দ্দান
ঘৃত দ্বারা বিল্বপত্রে কাজল প্রস্তুত করিয়া বিল্বপত্রের বোঁটাদ্বারা সেই কাজল দিয়া সেই দেবতার গায়ত্রী পাঠপূর্ব্বক চক্ষুর্দ্দান করিবে। ত্রিনেত্রদেবতা হইলে অগ্রে ঊর্দ্ধনেত্রে, তৎপরে বামনেত্রে দিবে। স্ত্রী দেবতার অগ্রে বাম চক্ষু পরে দক্ষিণ চক্ষু দান করিতে হয়।করন্যাস
আং অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ (উভয়হস্তের তর্জ্জনী অঙ্গুলী দ্বারা উভয় হস্তের অঙ্গুষ্ঠ স্পর্শ করিবে)। ঈং তর্জ্জনীভ্যাং স্বাহা, (অঙ্গুষ্ঠদ্বারা উভয় হস্তের তর্জ্জনী স্পর্শ করিবে)। এইরূপ অঙ্গুষ্ঠদ্বারা পর পর সমস্ত অঙ্গুলি স্পর্শ করিবে)। যথা -ঊং মধ্যমাভ্যাং বটে, ঐং অনামিকাভ্যাং হূং, ঔং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্, অঃ করতল পৃষ্ঠাভ্যামমন্ত্রায় ফট্। তর্জ্জনী ও মধ্যমাঙ্গুলি দ্বারা বামহস্ততলদেশে বেষ্টন করিয়া করতলধ্বনি করিবে।অঙ্গন্যাসক্রম
আং হৃদয়ায় নমঃ। ঈং শিরসে স্বাহা। ঊং শিখায়ৈ বষট্। ঐং কবচায় হূং। ঔং নেত্রাভ্যাং বৌষট্। (দেবতা ত্রিনেত্র হইলে - "ঔং" বেত্রত্রয়ায় বৌষট্" বলিতে হয়)। অঃ করতলপৃষ্ঠাভ্যামন্ত্রায় ফট্। (তর্জ্জনী ও মধ্যমা দ্বারা বাম হস্তের তলদেশ বেষ্টন করিয়া করতলধ্বনি করিবে)।অঙ্গন্যাস
হৃদয়ং মধ্যমানামাতর্জ্জনীভিঃ স্মৃতং শিরঃ। মধ্যমা-তর্জ্জনীভ্যাং স্যাদঙ্গুষ্ঠেন শিখা স্মৃতা।। দশভিঃ কবচং প্রোক্তং তিসৃভির্নেত্রমীরিতম্। প্রোক্তাঙ্গুলিভ্যাং-মন্ত্রং স্যাদঙ্গক্লপ্তিরিয়ং মতা।। তর্জ্জনীমধ্যমানামাঃ প্রোক্তা নেত্রত্রয়ে ক্রমাৎ। যদি নেত্রদ্বয়ং প্রোক্তং তদা তর্জ্জনীমধ্যমে। তন্ত্রসারঃ।
মধ্যমা, অনামিকা ও তর্জ্জনী অঙ্গুলীদ্বারা হৃদয়ে, মধ্যমা ও তর্জ্জনীদ্বারা মস্তকে, অঙ্গষ্ঠদ্বারা শিখাস্থানে, সর্ব্বাঙ্গুলি দ্বারা কবচে; তর্জ্জনী ও অনামিকা
এই দুই অঙ্গুলিদ্বারা নেত্রে এবং তর্জ্জনী ও মধ্যমা দ্বারা করতলে ন্যাস করিবে। যদি আরাধ্য দেবতার দুই নেত্র হয়, সেই স্থলে তর্জ্জনী ও মধ্যমাঙ্গুলিদ্বারা নেত্র ন্যাস করিবে। ইহা শড়ঙ্গন্যাস।
যে স্থলে পঞ্চাঙ্গন্যাসের ব্যবস্থা, সেখানে নেত্রপরিত্যাগ করিয়া অপর পঞ্চ অঙ্গে ন্যাস করিবে। বিষ্ণুবিষয়ে উপরিউক্ত অঙ্গুলিনিয়মে ন্যাস করিলে প্রশস্ত হয় না। নিম্নোক্ত বিধানক্রমে তাহা করিতে হয়। যথা -
অনঙ্গুষ্ঠা ঋজবো হস্তশাখা ভবেন্মুদ্রা হৃদয়ে শীর্ষকেহপি।
অধোহঙ্গুষ্ঠা খলু মুষ্টিঃ শিখায়াং করদ্বন্দ্বাঙ্গুলয়ো বর্ম্মণি স্যুঃ।
নারাচমুষ্ট্যূদ্ধ্বতবাহুযুগ্মকাঙ্গুষ্ঠতর্জ্জন্যুদিতো ধ্বনিস্তু।
বিশ্বগ্নিশক্তা কথিতান্ত্রমুদ্রা যত্রাক্ষিণী তর্জ্জনীমধ্যমে চ।।
বিষ্ণুবিষয়ে অঙ্গুষ্ঠহীন সরল হস্তশাখা দ্বারা হৃদয়ে ও মস্তকে ন্যাস করিবে এবং অঙ্গুষ্ঠমধ্যগতমুষ্টিদ্বারা
শিখা, উভয় হস্তের সর্ব্বাঙ্গুলিদ্বারা কবচ ও তর্জ্জনী এবং মধ্যমানেত্রে
ন্যাসকরিয়া অঙ্গুষ্ঠ ও তর্জ্জনী দ্বারা করতলধ্বনি করিবে।
ব্যাপকন্যাস
ওঁ বা মূলমন্ত্র উচ্চারণপূর্ব্বক হৃদয় হইতে আরম্ভ করিয়া পাদপর্য্যন্ত এবং পা হইতে হৃদয় পর্য্যন্ত দুই হস্ত প্রসারণপূর্ব্বক গাত্রের অতি সন্নিকট স্থান দিয়া সঞ্চালন করাকে ব্যাপকন্যাস বলে।ব্যাপকন্যাস নবধা বা সপ্তধা করিবে, শির হইতে পা পর্য্যন্ত এবং পা হইতে শির পর্যন্ত ঐরূপ ন্যাস করিবে। অথবা ১০৮ বার করিবে।5ঋষ্যাদিন্যাস
ঋষীন্ন্যসেন্মূর্ধ্নিদেশে ছন্দস্তু মুখপঙ্কজে। দেবতাং হৃহয়ে চৈব বীজন্তু গুহ্য-দেশকে। শক্তিঞ্চ পাদয়োশ্চৈব সর্ব্বাঙ্গে কীলকং ন্যসেৎ। ততস্তু তত্তন্মন্ত্রোক্তন্যাসান্ কুর্ষ্যাদিতি। তন্ত্রসারঃ।মস্তকে ঋষি, মুখে ছন্দ, হৃদয়ে দেবতা, গুহ্যদেশে বীজ, পাদদ্বয়ে শক্তি ও সর্ব্বাঙ্গে কীলক ন্যাস করিবে। যে দেবতার পূজায় যে ঋষি, যে ছন্দঃ, সেই সেই পদ্ধতিতে তাহা উক্ত আছে। এই সকল নামাদি উচ্চারণকরিয়া উক্ত স্থান সকল স্পর্শ করিতে হয়। এস্থলে সাধারণ ক্রমমাত্র লিখিত হইল। যথা -অমুকমন্ত্রস্য অমুকঋষিঃ অমুকছন্দ অমুকদেবতা অমুকবীজং অমুকশক্তিঃ অমুককীলকং মমইষ্টসিদ্ধ্যর্থে বিনিয়োগঃ। শিরসি ওঁ অমুকঋষয়ে নমঃ, মুখে অমুকচ্ছন্দসে নমঃ, হৃদি ওঁ অমুকদেবতায়ৈ নমঃ, গুহ্যে ওঁ অমুকবীজায় নমঃ, পাদয়োঃ ওঁ অমুকশক্তয়ে নমঃ, সর্ব্বাঙ্গে ওঁ অমুককীলকায় নমঃ।
পীঠন্যাস
আদিতে "ওঁ" এবং অন্তে "নমঃ" শব্দ যোগ করিয়া নিম্নলিখিত মন্ত্রে নিম্নলিখিতস্থান সমুদয় স্পর্শ করিবে। যথা হৃদি - ওঁ আধারশক্তয়ে নমঃ (এই ক্রমে) প্রকৃত্যৈ, কূর্ম্মায়, অনন্তায়, পৃথিব্যৈ, ক্ষীরসমুদ্রায়, শ্বেতদ্বীপায়, মণিমণ্ডপায়, কল্পবৃক্ষায়, মণিবেদিকায়ৈ, রত্নসিংহাসনায়, দক্ষিণস্কন্ধে ধর্ম্মায়, বামস্কন্ধে জ্ঞানায়, ঊরুদ্বয়ে বৈরাগ্যায়, ঐশ্বর্য্যায়, মুখে অধর্ম্মায়, বামপার্শ্বে অজ্ঞানায়, নাভৌ অবৈরাগ্যায়, দক্ষিণপার্শ্বে অনৈশ্বর্য্যায়, পুনঃ হৃদি অনন্তায়, পদ্মায়, অং অর্কমণ্ডলায় দ্বাদশকলাত্মনে নমঃ, উং সোমমণ্ডলায় ষোড়শকলাত্মনে নমঃ, মং বহ্নিমণ্ডলায় দশকলাত্মনে, হ্রীং জ্ঞানাত্মনে নমঃ।সংহার মাতৃকান্যাস
সংহারমাতৃকা ধ্যান। অক্ষস্রজং হরিণপোতমুদগ্রটঙ্কং বিদ্যাং করৈরবিরতং দধতীং ত্রিনেত্রাম্। অর্দ্ধেন্দুমৌলিমরুণামরবিন্দবাসাং বর্ণেশ্বরীং প্রণমত স্তনভারনম্রাম্।এই ধ্যান পাঠ করিয়া ক্ষ-কারাদি অকারান্ত ন্যাস করিবে ক্ষং নমং হৃদয়াদি মুখে, লং নমঃ হৃদয়াদ্যুদরে, হং হৃদয়াদি বামপদে - এইরূপে অং নমঃ ললাটে পর্যন্ত ন্যাস করিবে।
অস্য মাতৃকামন্ত্রস্য ব্রহ্মঋষির্গায়ত্রীচ্ছন্দো মাতৃকাসরস্বতী দেবতা হলো বীজানি স্বরাঃ শক্তয়ঃ মাতৃকান্যাসে বিনিয়োগঃ।উক্ত মন্ত্রদ্বারা মাতৃকান্যাসের ঋষ্যাদি স্মরণপূর্ব্বক লিখিত স্থলে পুস্প বা অঙ্গুষ্ঠ ও অনামিকা যোগে ন্যাস (স্পর্শ) করিবে।শিরসি ওঁ ব্রহ্মণে ঋষয়ে নমঃ, মুখে ওঁ গায়ত্রীচ্ছন্দসে নমঃ, হৃদি ওঁ মাতৃকা সরস্বত্যৈ
দেবতায়ৈ নমঃ, গুহ্যে ওঁ হল্ভ্যো বীজেভ্যো নমঃ, পাদয়োঃ ওঁ স্বরেভ্যঃ শক্তিভ্যো নমঃ, সর্ব্বাঙ্গে ওঁ ক্লীং কীলকায় নমঃ।
করন্যাস - ওঁ অং কং খং গং ঘং ঙং আং অঙ্গুষ্ঠ্যাভ্যাং নমঃ। ওঁ ইং চং ছং জং ঝং ঞং ঈং তর্জ্জনীভ্যাং স্বাহা। ওঁ ঊং টং ঠং ডং ঢং ণং ঊং মধ্যমাভ্যাং বষট্। ওঁ এং তং থং দং ধং নং ঐং অনামিকাভ্যাং হূং। ওঁ ওং পং ফং বং ভং মং ঔং কনিষ্ঠাভ্যাং বৌষট্। ওঁ অং যং রং লং বং শং ষং সং হং ক্ষং অঃ করতলপৃষ্ঠ্যাভ্যামন্ত্রায় ফট্।অঙ্গন্যাস - ওঁ অং কং খং গং ঘং ঙং আং হৃদয়ায় নমঃ। ওঁ ইং চং ছং জং ঝং ঞং ঈং শিরসে স্বাহা। ওঁ ঊং টং ঠং ডং ঢং ণং ঊং শিখায়ৈ বষট্। ওঁ এং তং থং দং ধং নং ঐং কবচায় হূং। ওঁ ওং পং ফং বং ভং মং ঔং নেত্রত্রয়ায় বৌষট্। ওঁ অং যং রং লং বং শং ষং সং হং ক্ষং অঃ করতলপৃষ্ঠ্যাভ্যামন্ত্রায় ফট্।অন্তর্ম্মাতৃকান্যাস।জ্ঞানার্ণবাদি তন্ত্রে লিখিত আছে যে, মাতৃকার ঋষ্যাদিন্যাস, করন্যাস ও অঙ্গন্যাস করিবার আগে অন্তর্ম্মাতৃকান্যাস করিবে। দেহমধ্যে আধারাদি ভ্রূমধ্য পর্য্যন্ত ছয়টি পদ্ম আছে, এ সকল পদ্মে অন্তর্ম্মাতৃকান্যাস করিতে হয়। কন্ঠস্থলে যে ষোড়শদল পদ্ম আছে, তাহার ষড়শ পত্রে ন্যাস করিবে। যথাঃ ওঁ অং নমঃ, আ নমঃ, ইং নমঃ, উং নমঃ, ঋং নমঃ, ৠং নমঃ, ঌ নমঃ, ষ্টং নমঃ, এং নমঃ, ঐং নমঃ, ওং নমঃ, ঔং নমঃ,অং নমঃ, অঃ নমঃ।হৃদয়স্থিত দ্বাদশদলপদ্মে - ওঁ কং নমঃ, খং নমঃ, গং নমঃ, ঘং নমঃ, ঙং নমঃ, চং নমঃ, ছং নমঃ, জং নমঃ, ঝং নমঃ, ঞং নমঃ, টং নমঃ, ঠং নমঃ।নাভিমূলস্থিত দশদলপদ্মে - ওঁ ডং নমঃ, ঢং নমঃ, ণং নমঃ, তং নমঃ, থং নমঃ, দং নমঃ, ধং নমঃ, নং নমঃ, পং নমঃ, ফং নমঃ।লিঙ্গমূলস্থিত ষড়্দলপদ্মে - ওঁ বং নমঃ, ভং নমঃ, মং নমঃ, যং নমঃ, রং নমঃ, লং নমঃ।মূলাধারস্থিত চতুর্দ্দলপদ্মে - ওঁ বং নমঃ, শং নমঃ, যং নমঃ, সং নমঃ।ভ্রূমধ্যস্থিত দ্বিদলপদ্মে - ওঁ হং নমঃ, ক্ষং নমঃ।বিষ্ণুবিষয়ে আধারাদি মস্তক পর্য্যন্ত ষট্ পদ্মে নিম্নলিখিত বর্ণন্যাস করিবে।যথা - মূলাধারস্থিত সুবর্ণাভ চতুর্দ্দলপদ্মে - ওঁ বং নমঃ, শং নমঃ, ষং নমঃ, সং নমঃ।লিঙ্গমূলস্থিত বিদ্যুদাভ ষড়্দলে স্বাধিষ্ঠানপদ্মে - ওঁ বং নমঃ, ভং নমঃ, মং নমঃ, যং নমঃ, রং নমঃ, লং নমঃ।নাভিমূলস্থিত নীলমেঘপ্রভ দশদল মণিপুরপদ্মে - ওঁ ডং নমঃ, ঢং নমঃ, ণং নমঃ, তং নমঃ, থং নমঃ, দং নমঃ, ধং নমঃ, নং নমঃ, ফং নমঃ।হৃদয়স্থিত প্রবালরুচিসন্নিভ দ্বাদশদল অনাহত পদ্মে - ওঁ কং নমঃ, খং নমঃ, গং নমঃ, ঘং নমঃ, ঙং নমঃ, চং নমঃ, ছং নমঃ, জং নমঃ, ঝং নমঃ, ঞং নমঃ, টং নমঃ, ঠং নমঃ।কন্ঠস্থিত ধুম্রবর্ণ ষোড়শদল বিশুদ্ধাখ্যপদ্মে - ওঁ অং নমঃ, আ নমঃ, ইং নমঃ, উং নমঃ, ঋং নমঃ, ৠং নমঃ, ঌ নমঃ, ষ্টং নমঃ, এং নমঃ, ঐং নমঃ, ওং নমঃ, ঔং নমঃ,অং নমঃ, অঃ নমঃ।ভ্রুমধ্যস্থিত চন্দ্রবর্ণ দ্বিদলপদ্মে হং নমঃ, ক্ষং নমঃ।হিমবর্ণ বিভূষিত সহস্রারপদ্মে সৃষ্টিস্থিতিপ্রলয়াত্মক পরমশিবের চিন্তা করিবে। ইহাকেই অন্তর্ম্মাতুকান্যাস বলে।এই প্রকারে অন্তর্ম্মাতুকান্যাস করিয়া বাহ্যমাতৃকান্যাস করিবে। প্রথমে বাহ্যমাতৃকার ধ্যান করিবে।ধ্যান - পঞ্চাশল্লিপিভিব্বিভক্তমুখদোঃপন্মধ্যবক্ষঃস্থলাং ভাস্যন্মৌলিনিবদ্ধচন্দ্রশকলামাপীনতুঙ্গস্তনীম্। মুদ্রামক্ষগুণং সুধাঢ্যকলসং বিদ্যাঞ্চ হস্তান্বুজৈ-বিভ্রাণাং বিশদপ্রভাং ত্রিনয়নাং বাগ দেবতামাশ্রয়ে।এই মন্ত্রে ধ্যান করিয়া ন্যাস করিবে। ন্যাসে অঙ্গুলি নিয়ম যথা -ললাটেহনামিকামধ্যে বিন্যসেন্মুখপঙ্কজে। তর্জ্জনীমধ্যমানামা বৃদ্ধানামে চ নেত্রয়োঃ। অঙ্গুষ্ঠং কর্ণয়োর্ন্যস্য কনিষ্ঠাঙ্গুষ্ঠকৌ নসোঃ। মধ্যাস্তিস্রো গণ্ডয়োস্তু মধ্যমাঞ্চৌষ্ঠয়োর্ন্যসেৎ।অনামাং দন্তয়োর্ন্যর্স্য মধ্যমামুত্তমাঙ্গকে। মুখেহনামাং মধ্যমাঞ্চৌ হস্তে পাদে চ পার্শ্বয়োঃ। কনিষ্ঠানামিকামধ্যান্তাস্তু পৃষ্ঠে চ বিন্যসেৎ। হৃদয়ে চ তলং সর্ব্বমংশয়োশ্চ ককুৎস্থলে। হৃৎপূর্বং হস্তপৎকুক্ষিমুখেষু তলমেব চ। এতাশ্চ মাতৃকামুদ্রাঃ ক্রমেণ পরিকীর্ত্তিতাঃ। অজ্ঞাত্বা বিন্যসেদ্ যস্তু ন্যাসঃ স্যাত্তস্য নিস্ফলঃ।ললাটদেশে অনামিকা ও মধ্যমাঙ্গুলির দ্বারা ন্যাস করিবে। মুখে তর্জ্জনী, মধ্যমা ও অনামিকার যোগে ন্যাস করিবে। এইরূপ নেত্রদ্বয়ে বৃদ্ধা ও অনামিকা; কর্ণদ্বয়ে কনিষ্ঠা ও অঙ্গুষ্ঠা; গণ্ডদ্বয়ে তর্জ্জনী, মধ্যমা ও অনামিকা; ওষ্ঠদ্বয়ে মধ্যমা; দন্তপংক্তিদ্বয়ে অনামিকা; মস্তকে মধ্যমা, মুখে অনামিকা ও মধ্যমা; হস্ত, পদ, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠে কনিষ্ঠা অনামিকা ও মধ্যমা; নাভিদেশে কনিষ্ঠা, অনামিকা, মধ্যমা ও অঙ্গুষ্ঠা; উদরে সর্ব্বাঙ্গুলি; বক্ষস্থল, অংশদ্বয় ককুৎস্থল, হৃদয় হইতে হস্ত পর্য্যন্ত, হৃদয় হইতে পাদ পর্য্যন্ত, হৃদয় হইতে উদর পর্য্যন্ত ও হৃদয় হইতে মুখ পর্য্যন্ত, স্থানে হস্ততলদ্বারা ন্যাস করিবে। এই মাতৃকামুদ্রা বলা হইল, এই মুদ্রা না জানিয়া যে ব্যক্তি অন্যরূপে ন্যাস করিবে, তাহার ন্যাস বিফল হইবে।ন্যাসের মন্ত্রাদি ওঁ অং নমঃ ললাটে, ওঁ আং নমঃ মুখবৃত্তে, (এই ক্রমে) ইং ঈং চক্ষুষোঃ, উং উঃ কর্ণয়োঃ, ঋং ঋং নসোঃ, ঌং রং গণ্ডয়োঃ এং ওষ্ঠে, ঐং অধরে, ওং ঊর্দ্ধদন্তে, ঔং অধোদন্তে, অং ব্রহ্মরন্ধ্রে, অঃ মুখে। কং দক্ষিণ বাহুমূলে, খং কূর্পরে, গং মণিবন্ধে ঘং অঙ্গুলিমূলে, ঙং অঙ্গুল্যগ্রে। চং ছং জং ঝং ঞং বামবাহু মূল প্রভৃতি স্থানে। টং ঠং ডং ধং ণং দক্ষিণ পাদমূল হইতে অঙ্গুল্যগ্র পর্যন্ত। তং থং দং ধং নং বামপাদমূল হইতে অঙ্গুল্যগ্র পর্যন্ত। পং দক্ষিণপার্শ্বে, কং বামপার্শ্বে, বং পৃষ্ঠে ভং বাভৌ, মং উদরে, যং হৃদি, রঙ দক্ষিণ স্কন্ধে, লং ককুদি, বং বামস্কন্ধে শং হৃদয়াদি বামপদে হৃদয়াদ্যুদরে, ক্ষং হৃদয়াদিমুখে। সর্ব্বত্র "ওঁ" পদ আদিতে এবং "নমঃ" অন্তে যোগ করিয়া ন্যাস করিবে।