তান্ত্রিক সংক্ষেপে হোম
কুণ্ড
অথবা স্থণ্ডিল নির্ম্মাণ করিয়া বীক্ষণাদি সংস্কার করিবে। যথা- মূল মন্ত্রে অবলোকন,
“ফট” এই মন্ত্রে
তাড়ন এবং মূলমন্ত্রে প্রোক্ষণ করিয়া “হূং” এই মন্ত্রে পুনরায় অভ্যূক্ষণ করিবে।
তৎপরে
মূলমন্ত্র উচ্চারণপূর্ব্বক “ওঁ কুণ্ডায় নমঃ” এই মন্ত্রে পূজা করিয়া পূর্ব্বাগ্র ও উত্তরাগ্র
তিন তিনটি রেখা দিবে। পূর্ব্বাগ্ররেখাত্রয়ে দক্ষিণাদি ক্রমে পূজা করিবে - ওঁ
মুকুন্দায় নমঃ, ওঁ ঈশানায়া নমঃ, ওঁ পুরন্দরায় নমঃ তদনন্তর উত্তরাগ্র-রেখাত্রয়ে, -
ওঁ ব্রহ্মণে নমঃ, ওঁ বৈবস্বতায় নমঃ, ওঁ ইন্দবে নমঃ, এই ক্রমে পূজা করিবে। সুন্দরীবিষয়ক হোমে সর্ব্বত্র ষট্তারা মন্ত্রে পূজা করিবে। ঐঁ হ্রী শ্রী
ঐঁ ক্লীং সৌঃ ব্রহ্মণে নমঃ।
তৎপরে
কুণ্ডমধ্যে ষট্কোণ তদ্বাহ্যে বৃত্ত প্রভৃতি যাহা অঙ্কিত করা হইয়াছিল তাহার উপরে
মূলমন্ত্রে পাঁচবার পুস্পাঞ্জলি প্রদান করিবে। সুন্দরী পক্ষে বালা বীজে পঞ্চ পুস্পাঞ্জলী দিতে হয়।
অতঃপর
“ওঁ” এই মন্ত্রে
হোমের দ্রব্য সমুদয় প্রোক্ষণ করিয়া বহ্নির, যোগপীঠ পূজা করিবে। যথা- কর্ণিকোপরি -
এতে
গন্ধপুস্পে ওঁ আধার শক্ত্যাদিপীঠদেবতাভ্যো নমঃ। (এই ক্রমে)
অগ্ন্যাদি
কোণ চতুষ্টয়ে ধর্ম্মায়, জ্ঞানায়, বৈর গ্যায়, ঐশ্বর্য্যায়।
পূর্ব্বাদিদিক্
চতুষ্টয়ে অধর্ম্মায়, অজ্ঞানায়, অবৈরাগ্যায়, অনৈশ্বর্য্যায়।
মধ্যে
অনন্ত্যায়, পদ্মায়,
অং
অকর্মণ্ডলায় দ্বাদশকলাত্মনে, উং সোমমণ্ডলায় ষোড়শকলাত্মনে,
মং
বহ্নিমণ্ডলায় দশকলাত্মনে, কেশর ও পূর্ব্বাদিমধ্যে পীতায়ৈ,
শ্বেতায়ৈ,
অরুণায়ৈ, কৃষ্ণায়ৈ, ধূম্রায়ৈ,
তীব্রায়ৈ, স্ফুলিঙ্গিন্যৈ, রুচিরায়ৈ,
জ্বালিন্যৈ
বং বহ্ন্যাসনায়, আদিতে ‘ওঁ’এবং অন্ত্যে ‘নমঃ’ শব্দ ব্যবহার করিবে।
ওঁ
বাগীশ্বরীমৃতুস্নাতাং নালেন্দীবরলোচনাম।
বাগীশ্বরেণ
সংযুক্তাং ক্রীড়াভাবসমন্বিতাম্।।
এই
মন্ত্র পাঠ করিয়া “ওঁ হ্রীং বাগীশ্বরসহিত-বাগীশ্বর্য্যৈ” এই মন্ত্রে পঞ্চোপচারে পূজা
করিবে।
বিধিবিহিত অগ্নি
সংগ্রহ করিয়া মূলমন্ত্র উচ্চারণপূর্ব্বক “বৌষট্”
মন্ত্রে অগ্নিকে অভিমন্ত্রিত ও অবলোকন করিবে।
অনন্তর “অস্ত্রায়
ফট্”
মন্ত্রে আবাহন করিয়া মূলমন্ত্র উচ্চারণ পূর্ব্বক “হূঁ ফট্
ক্রব্যাদেভ্যঃ স্বাহা” এই মন্ত্রে ক্রব্যাদাংশ
(প্রজ্জ্বলিত অগ্নির কিয়দংশ) পরিত্যাগ করিবে। তৎপর “ফট্”,
এইমন্ত্রে বহ্নিরক্ষণ, “হূং” এই মন্ত্রে অবগুন্ঠন ও “রং”
মন্ত্রে ধেনুমুদ্রাদ্বারা অমৃতীকরণ করিয়া দুই হস্তদ্বারা বহ্নি ধারণ করতঃ কুণ্ডোপরি
তিনবার পরিভ্রমণপূর্ব্বক জানুদ্বারা ভূমি স্পর্শ করিয়া
বহ্নিতে শিববীজ চিন্তা করিতে করিতে কুণ্ডের মধ্যস্থলে আত্মাভিমুখে স্থাপন করিবে।
তদন্তর
“হ্রী বহ্নিমূর্ত্তয়ে নমঃ”
এই মন্ত্রে পূজা করিয়া “রং’ বহ্নিচৈতন্যায় নমঃ” এই মন্ত্রে বহ্নির চৈতন্য
সংযোজন করিয়া - ওঁ চিৎপিঙ্গল হন হন দহ দহ পচ পচ সর্ব্বজ্ঞাজ্ঞাপয়
স্বাহা, মন্ত্রে গন্ধপুস্প দিয়া বহ্নি প্রজ্জ্বলিত করিবে,
পরে হাত জোড় করিয়া পাঠ করিবে -
ওঁ
অগ্নিং প্রজ্জ্বলিতং বন্দে জাতবেদং হুতাশনম্।
সুবর্ণবর্ণমমলং
সমিদ্ধং বিশ্বতোমুখম্।।
অগ্নে
ত্বং অমুকদেবতানামাসি বলিয়া*
অগ্নির
বামকরণপূর্ব্বক ওঁ বৈশ্বানর জাতদেব
ইহাবহ
লোহিতাক্ষ
সর্ব্বকর্ম্মাণি সাধয় স্বাহা - এইমন্ত্রে অর্ঘ্যাদি উপচার দ্বারা পূজা করিয়া,
“এতে
গন্ধপুস্পে ওঁ অগ্নের্হিরণ্যাদিসপ্তজিহবাভ্যো নমঃ”
এইক্রমে “ওঁ
সহস্রর্চ্চিষে হৃদয়য় নমঃ” ইত্যাদি অগ্নি ষড়জেভ্যো নমঃ,
ওঁ অগ্নয়ে জাতবেদসে
ইত্যাদ্যষ্টমূর্ত্তিভ্যো নমঃ
তদ্বাহ্যে ওঁ
ব্রাহ্ম্যাদ্যষ্টশক্তিভ্যো নমঃ,
তদ্বহিঃ ওঁ
পদ্মাদ্যষ্টনিধিভ্যো নমঃ
তদ্বাহ্যে ওঁ
ইন্দ্রাদিলোকপালেভ্যো নমঃ
তদ্বাহ্যে ওঁ
ধবজাদ্যস্থেভ্যো নমঃ।।
*অমুকদেবতানামাসি
স্থলে যে দেবতার হোম, সেই দেবতার নামই করিতে হইবে। যথা - পূজায় অগ্নে ত্বং “দক্ষিণকালিকানামাসি”
বলিতে হইবে।
অতঃপর প্রাদেশ
প্রমাণ কুশপত্রদ্বয় (পবিত্র) ঘৃতমধ্যে নিক্ষেপপূর্ব্বক বাম দক্ষিণ ও মধ্যভাগে ইড়া
পিঙ্গলা সুষুম্না নাড়ী চিন্তা করতঃ ঘৃতপাত্রের বাম দক্ষিণভাগ হইতে ঘৃত গ্রহণ করিয়া
হোম করিবে। প্রথমতঃ স্রুব দ্বারা (কাষ্ঠের হাতা বা কুশিতে
করিয়া) আজ্যস্থালীর (ঘৃতপাত্রের) দক্ষিণভাগ হইতে ঘৃত গ্রহণ করিয়া ‘ওঁ
অগ্নয়ে স্বাহা”
এই মন্ত্রে অগ্নির দক্ষিণনেত্রে হোম করিবে। ঐরূপ বামভাগ হইতে ঘৃত গ্রহণ করিয়া
বামনেত্রে হোম করিবে, “ওঁ সোমায় স্বাহা।” মধ্যভাগ হইতে ঘৃত লইয়া অগ্নির
ললাটনেত্রে হোম করিবে, “ওঁ অগ্নিসোমাভ্যাং স্বাহা”
পুনরায় ‘ওঁ
নমঃ’
বলিয়া দক্ষিণভাগ হইতে ঘৃত লইয়া - “ওঁ অগ্নয়ে স্বিষ্টিকৃতে স্বাহা”
এই মন্ত্রে অগ্নির মুখে হোম করিবে। অনন্তর মহাব্যাহৃতিহোম করিবে - ওঁ ভূঃ স্বাহা,
ওঁ ভূবঃ স্বাহা, ওঁ স্বঃ স্বাহা, ওঁ ভূর্ভূবঃ স্বঃ স্বাহা।
অনন্তর “ওঁ
বৈশ্বানর জাতবেদ ইহাবহ লোহিতাক্ষ সর্ব্বকর্ম্মাণি সাধয় স্বাহা”
এই মন্ত্রে তিনবার হোম করিয়া অগ্নিতে পীঠদেবতাসহ মূল দেবতার পূজা করিয়া ঘৃতদ্বারা
মূলমন্ত্রে পঞ্চবিংশতিবার আহুতি দিবে। অনন্তর আত্মার সহিত বহ্নি ও দেবতার একত্ব
চিন্তা করিয়া মূলমন্ত্রে একাদশবার আহুতি দিবে। তৎপরে “ওঁ
মূলমন্ত্রস্যাঙ্গদেবতাভ্যঃ স্বাহা” এবং “আবরণদেবতাভ্যঃ
স্বাহা”
- এই মন্ত্রে হোম করিবে। সমর্থ হইলে অঙ্গদেবতার প্রত্যেককে এক এক আহুতি দিবে।
তদন্তর সঙ্কল্প করিয়া বিল্বপত্র দ্বারা হোম করিবে। সঙ্কল্প যথা -
অদ্যেত্যাদি - অমুকদেবতাপ্রীতিকামঃ
অমুকদেবতাপূজাকর্ম্মণি (মূল-মন্ত্রোচ্চারণপূর্ব্বক)
স্বাহেতি মন্ত্রকরণকাষ্টোত্তরশত (কিম্বা যতটা হইবে)
সংখ্যকসাজ্যবিল্বপত্রসামাদ্ভর্হ্যে মমহং করিষ্যে।
No comments:
Post a Comment